
অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার পূজার থিম প্রকাশের সাথে ঐতিহাসিক আন্দোলনের ডাক
দেবশ্রী মুখার্জী : ১৩ই সেপ্টেম্বর কলকাতা প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার পক্ষ থেকে এক সাংবাদিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হল ৷ উক্ত সংস্থার রাজ্য সভাপতি চন্দ্রচূড় গোস্বামীর বিশেষ উদ্যোগে আয়োজিত এই প্রেসমিটে প্রথম বক্তব্য রাখেন তিনি নিজেই ৷ এরপর অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন মিডিয়া ইনচার্জ অনামিকা দে, অফিস সেক্রেটারি শ্রাবণী মুখার্জী এবং সহসভাপতি দীপ্তিশ গুহ। সমগ্র প্রেসমিটটি সঞ্চালনা করেন কালচারাল কনভেনর দেবশ্রী কাঞ্জিলাল। অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার রাজ্য সভাপতি তাঁর বক্তব্যে মূলত এই বছর অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার দুর্গাপূজার থিম রাম মন্দির এবং রাম মন্দির আন্দোলনে অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার কি ভূমিকা রয়েছে সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। রাম মন্দির আন্দোলনে সুন্নী ওয়াকফ বোর্ড, নির্মোহী আখারা এবং তৃতীয় পক্ষ যে অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা সেই কথা তিনি উল্লেখ করেন। সেই সাথে বিজেপি যে তাদের দুর্গা পূজার থিম চুরি করে নিয়ে রামমন্দির করছে সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারে সেই গুরুতর অভিযোগও করেন রাজ্য সভাপতি চন্দ্রচূড় বাবু। এ ছাড়া অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার পক্ষ থেকে হালাল খাদ্য প্রণালী ও অর্থনীতি এবং সাত্ত্বিক অর্থনীতি ও খাদ্য প্রণালীর বাইরে গিয়ে “ফুড ফর হিউম্যানিটি” নামে ধর্মের ঊর্ধ্বে উঠে খাদ্য প্রণালী এবং সনাতনী জাতীয়তাবাদী বিকল্প অর্থনীতির ওপর জোর দেওয়া হয়।

এ ছাড়া বর্তমানে দেশের নাম “ভারত বনাম ইন্ডিয়া” এই বিতর্কের মধ্যে অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার রাজ্য সভাপতি চন্দ্রচূড় গোস্বামী বলেন দেশটির নাম ভারত, ইন্ডিয়া বা হিন্দুস্তান যাই হোক দেশের নাম নিয়ে রাজনীতি না করে বরং ভারত বর্ষের অখণ্ডতা, সার্বভৌমত্ব এবং সমগ্র ভারতবাসীর সার্বিক উন্নয়নের উপর জোর দেওয়া হলো অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার একমাত্র লক্ষ্য। এছাড়া চন্দ্রচূড় গোস্বামী তাঁর বক্তব্যে “সবার জন্য সংরক্ষণ বা রিজার্ভেশন ফর অল” এই ঐতিহাসিক আন্দোলনের ডাক দেন ৷ অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা দেশের এস সি, এস টি, ওবিসি এবং অন্যান্য প্রান্তিক উপজাতির মানুষদের পাশাপাশি সাধারণ বা জেনারেল কাস্ট এর মানুষরাও যাতে সংরক্ষণের সুবিধে পায় সেই ব্যাপারে আন্দোলনে নামবেন এমনটাই তিনি জানান । চন্দ্রচূড় বাবু বলেন অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা জাতিভেদ প্রথা মানেনা। তারা বিশ্বাস করে ‘বসুধৈব কুটুম্ব’। ভারতবর্ষে অতীতেও কর্মের ভিত্তিতে বিভাগ ছিল, জাতিভেদ প্রথা ছিল না। তবে এখন যেহেতু জাতির ভিত্তিতে সংরক্ষণ আছে তাই সাধারন বা জেনারেল কাস্ট এর মানুষও হতদরিদ্র হতে পারে। তারা তো বানের জলে ভেষে আসেনি, তাই প্রান্তিক উপজাতির মানুষদের মত তাদেরও সংরক্ষণের আওতায় এনে সমস্ত প্রকার সুযোগ সুবিধে দেওয়া উচিৎ বলে দাবী করেন অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার রাজ্য সভাপতি চন্দ্রচূড় গোস্বামী। নির্বাচন কমিশনের স্বীকৃতি পত্র ও সিম্বল প্রাপ্তির চিঠি দেখিয়ে আগামী দিনে কলকাতা থেকেই অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা রাজ্য ও সর্বভারতীয় রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করবে বলে ঘোষণা করেন চন্দ্রচূড় গোস্বামী। সূত্র মারফৎ জানা গেছে ভারতবর্ষের দুই যুযুধান প্রতিপক্ষ শিবির থেকে প্রস্তাব এলেও অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা এখনও অবধি কোনো শিবিরেই যোগদান করার কথা মনস্থির করেনি। সভাপতি চন্দ্রচূড় গোস্বামীর বক্তব্য “হিন্দুত্ব নিয়ে ভাওতাবাজির রাজনীতি না করে যে রাজনৈতিক শিবির প্রকৃতই সনাতনী জাতীয়তাবাদী মানুষদের জন্য কাজ করবে, অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা তাদের সাথেই আগামী লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে, কারণ হিন্দুত্বের প্রশ্নে বা সনাতনী জাতীয়তাবাদী আদর্শের প্রশ্নে তারা কোনো রকম আপোষ করতে প্রস্তুত নয়।”
